মহাবিশ্বের অন্যতম মহালোচিত বিষয়
সুপারনোভা ঃ
বহুদিন পরে আবার ফিরলাম ।
পরীক্ষা নিরীক্ষার ফাঁদে পরে আপনাদের
কাছ থেকে অনেক দিন দূরে থাকতে হয়েছে ।
আশা করি সবাই ভাল আছেন । আজ
আমি আপনাদের পাঠানো একটা রিকুষ্টের
পোষ্ট করছি আশা করি ভাল লাগবে ।
“সুপারনোভা” যার বাংলা অর্থ হল
অতিনবতারা। অতিনবতারা হলো এক
ধরনের নাক্ষত্রিক বিস্ফোরণ যার
ফলশ্রুতিতে নক্ষত্র ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়
এবং অবশেষরূপে থাকে নিউট্রন
তারা কিংবা ব্ল্যাকহোল
(কৃষ্ণবিবর) এর মত অনেক অমিমাংশিত
রহস্য। নক্ষত্রের অভ্যন্তরে
বহির্মুখী চাপ যথেষ্ট পরিমাণ
কমে যাওয়ায় এটি আর মহাকর্ষীয়
আকর্ষণকে
আটকে রাখতে পারে না,
ফলে নক্ষত্রের মধ্যে এক প্রচণ্ড
অন্তস্ফোটন (Implosion) ঘটে। নক্ষত্রটির
মোট ভর এর কেন্দ্রে সংকুচিত
হয় আর গ্যাসীয়
প্লাজমা অবস্থায় থাকা বস্তু ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন
হয়ে প্রবলবেগে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে
। এই ঘটনাই অতিনবতারা বিস্ফোরণ
হিসেবে পরিচিত।কোটি কোটি ওয়াটের
বৈদ্যুতিক আলো সমস্ত আকাশগঙ্গাকে কিছু
সময়ের জন্য আলোকিত করে ফেলে ।অল্প
সময়ে একটি সুপারনোভা এত
বেশি শক্তি নির্গত
করতে পারে যে তা আমাদের সূর্য
তার সারাজীবনে ধরে রাখা শক্তির অনেক বড়
।
সুপারনোভার ইতিহাস ঃ
১৮৫ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম একজন
চাইনিজ
জোতর্বিজ্ঞানী সুপারনোভা পর্যবেক্ষ
ন করেন। আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল
সুপারনোভা ছিল SN1006 ।
সবচেয়ে বেশি পর্যবক্ষনকৃত
সুপারনোভার নাম SN1054 । আমাদের
গ্যালাক্সিতে সবশেষ সংঘটিত
দুটি সুপারনোভা SN 1572 ও SN 1604 যা
খালি চোখেই দেখা গিয়েছিল।
যা ইউরোপের
জোতির্বিজ্ঞানে ব্যাপক পরিবর্তন
এনেছিল কারন তারা একে এরিস্টটলের
মত চাঁদ মনে করত।
কতটা শক্তিশালী সুপারনোভাঃ
৪৪৩.৭ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীর
সবচেয়ে নিকটে প্রায় ১০০ আলোক
বর্ষের কিছু কম
দূরত্বে একটি সুপারনোভার বিস্ফোরন
হয়েছিল।
যার ফলে পৃথিবীর
বায়ুমন্ডলের উপরিভাগে প্রচন্ড
গামা রশ্মির কারনে নাইট্রোজেন
রাসায়নিক বিক্রিয়ায় নাইট্রোজেন
অক্সাইডে রুপান্তরিত হয়ে যায়
এবং ওজন স্তর
ক্ষয়ে গিয়ে পৃথিবী সূর্যের
অতিবেগুনী রশ্মি এবং অন্যান্য
মহাজাগতিক রশ্মির জন্য উন্মূক্ত
হয়ে পড়ে। যা পৃথিবীতে বয়ে এনেছিল
অর্ডোভিসিয়ান অভিশাপ। যার
কারনে পৃথিবীর সমুদ্র থেকে প্রায়
১০০ সামুদ্রিক প্রজাতির প্রাণীর
বিলুপ্তিসহ প্রায় ৬০% সাম্রদ্রিক
প্রানীর মৃত্যুর কারন হয়ে দাঁড়ায়
এবং পৃথিবীর ইতিহাসে কর্ডোভিসিয়ান
বিলুপ্তি নামে খ্যাত।
জানার বিষয় ঃ
1. সুপারনোভা বিস্ফোরনের সময় এর
অ্ভ্যন্তরস্ত তারার সমস্ত
পদার্থকে সেকেন্ড প্রায় ৩০০০০
কি.মি বেগে বাহিরের দিকে ছুড়ে মারে।
আসে পাশে অবস্থিত সকল আন্ত-নাক্ষত্রিক
মাধ্যমগুলোতে প্রচন্ড শক ওয়েব
বয়ে নিয়ে যায়। এ শক ওয়েব কয়েক
আলোক বর্ষ দূর পর্যন্ত
সুপারনোভা বিস্ফোরনের ধূলাবালি ও
ধোয়া বয়ে নেয়।
2.যখন
নক্ষত্রের অভ্যন্তরের নিউক্লিয়ার
ফিউশান চলার মত আর কোন
জ্বালানি থাকে না তখন এটি প্রচন্ড
বেগে নিজের মহাকর্ষের
টানে চুপষে যেতে থাকে ফলে প্রচন্ড
বিস্ফোরেনের মাধ্যমে এর বাহিরের
পদার্থগুলোকে বের করে দেয়।
3.এখন প্রায় প্রতিবছরই প্রচুর
বিভিন্ন ধরণের সুপারনোভা আবিষ্কৃত হয়।
২০০৫
সালে ৩৬৭টি, ২০০৬সালে ৫৫১টি, ২০০৭
সালে ৫৭২টি সুপারনোভা আবিষ্কৃত
হয়েছিল ।
প্রকরণের সংক্ষিপ্ত বিবরণী ঃ
আমাদের মিল্কি-ওয়ের মত সাইজের
গ্যালাক্সিতে প্রতি ৫০
বছরে একটি করে সুপারনোভা সংঘটিত
হতে পারে।
প্রকারভেদ ঃ
সুপারনোভাকে এদের বর্ণালীতে আলোর
শোষনের উপর ভিত্তি করে দুইভাবে ভাগ
করা হয়। যদি কোন সুপানোভার
বর্ণালীতে আলোর শোষণ হাইড্রোজেনের
কারনে হয় তাহলে এটি Type II
সুপারণোভা অণ্যক্ষ্রত্রে সুপারনোভাগুলো Typ
I ধরনের।Type I এবং Type II এর মাঝেও
আরো প্রকারভেদ রয়েছে।
মন্তব্য ঃ সুপারনোভা একটি অতিপ্রকৃতিক
দিগন্ত ঘটনা । বিশ্বাস্য কিংবা অবিশ্বাস্য
যাই হোক না কেন আমরা থেমে থাকবনা এ
রহস্যের তরে । সামনে অসাধারণ কিছু
ঘটতে যাচ্ছে ।যার ফলে আমরা আরও অনেক
কিছু বুঝতে পারব ।
বিজ্ঞানকে প্রকৃতি অতি প্রাকৃতিক কিছু দান
করছে এবং করবে যা হতে পারে বহু
দূরে একটা সুগমণ পথ ।
ধন্যবাদ অনুরোধ দাতাদেরকে এবং আমাদের
সাবস্ক্রাইবার নিয়মিত পাঠকদেরকে ।


কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন